স্বদেশ ডেস্ক:
পদ্মাসেতুর ৩০তম স্প্যান বসানো হয়েছে। ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্প্যানটি বসার মধ্য দিয়ে সেতুর সাড়ে ৪ কিলোমিটার দৃশ্যমান হলো।
আজ শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে সেতুর জাজিরা প্রান্তের ২৬ ও ২৭ নম্বর খুঁটির ওপর ‘৫বি’ নম্বর স্প্যানটি বসানো হয়। বৈরি আবহাওয়ায় যথাসময়ে স্প্যানটি বসানো সম্ভব হলো।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো: আব্দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতুর ২৬ ও ২৭ নম্বর খুঁটি এলাকায় শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি রুটের চ্যানেল ছিল। সে কারণেই এই দু’টি খুঁটি নির্মাণে বিলম্ব হয়। ড্রেজিং করে পাশ দিয়ে চ্যানেল করে দিয়ে খুঁটি দুটি তৈরি করা হয়।
তিনি জানান, বর্ষায় এই এলাকাটিতে প্রচুর পলি জমে। তাই ভরা বর্ষার আগেই এই দু’টি স্প্যান স্থাপন করা হলে চ্যালেঞ্জ থাকে না। আর মাওয়ার অংশে নদী অনেক গভীর। এখানে বর্ষায়ও অনেক স্রোত থাকে তাই এখানে পলি জমতে পারে না। চ্যানেল নব্যতা সংকট হয় না, তাই বর্ষায় মাওয়ার অংশের স্প্যানগুলো স্থাপন সহজ হবে।
মধ্য জুনে আরো একটি স্প্যান বসানো হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা। তিনি আরো বলেন, আগামী ২০ জুন সেতুর ৩১তম স্প্যান বসনোর সিডিউল ঘোষণা করা হয়েছে। এটি বসবে ২৫ ও ২৬ নম্বর খুঁটিতে। এই ৩০ ও ৩১ তম স্প্যান স্থাপনের মধ্যদিয়ে সেতুটির সরাসরি জাজিরা প্রান্ত থেকে মাওয়ার অংশ স্পর্শ করবে। তাই জাজিরার অংশে আর কোনো স্প্যান বাকি থাকছে না। আর মাওয়ার অংশে স্প্যান বসানো বাকি থাকছে ১০টি। তবেই সেতুর পূর্ণ অংশ অর্থাৎ ৬.১৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান হবে।
এর আগে শুক্রবার সকালে মাওয়া প্রান্তের কুমারভোগ ইয়ার্ড থেকে ৩ হাজার ১৫০ মে. টন ওজনের ‘৫বি’ নম্বর স্প্যান ভাসমান ক্রেনে করে নিয়ে যাওয়া হয় খুঁটির কাছে। পরে স্প্যানটি প্লেস করে রাখা হয়। স্প্যানটি খুঁটিতে বসানোর জন্য আগেই ২৭ নম্বর খুঁটিতে লিফটিং ফ্রেম (স্প্যানকে ঝুলিয়ে রাখার যন্ত্র) স্থাপন করা হয়েছিল।
স্প্যানটি দু’খুঁটিতে স্থায়ীভাবে ওয়েল্ডিং করার আগ পর্যন্ত একপাশ আগলে রাখে এই লিফটিং ফ্রেম। পরে আজ সকাল থেকে স্প্যানটি খুঁটির ওপর উঠানোর কাজ শুরু হয়। ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে স্প্যানটি স্থাপন করা হয় খুঁটির উপর। এরই মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতু সাড়ে ৪ কিলোমিাটার দৃশ্যমান হলো।
এছাড়া দ্রুত এগিয়ে চলেছে স্প্যানের ওপরে স্লাব বসানোর কাজ। সেতুর উপরের তলায় রোডওয়ে স্লাব বসবে ২৯১৭টি। এর মধ্যে তৈরী হয়ে গেছে ২৭২৭টি। বসানো হয়েছে ৫৮১টি। নিচতলায় রেলওয়ে স্লাব বসবে ২৯৫৯টি। এর সবগুলোই তৈরী হয়ে গেছে। আর স্থাপন করা হয়েছে ১১০৫টি। দু’পাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সেতুর কাজও পুরোদমে এগিয়ে চলেছে। সুপার টি গার্ডার স্থাপন হচ্ছে সমানে।
বর্তমান সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূলসেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের ‘সিনো হাইড্রো করপোরেশন’।
সূত্র : বাসস